ছাদে, উঠানে, ঘরের মাচায় অনেক জায়গাতেই ছোট পরিসরে লাউ গাছ ও লাউ শাক জন্মাতে দেখা যায়। দেখতে কিন্তু খুব সাদাসিধে হলেও এর উপকার করার ক্ষমতা অনেক। শাক বলতে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় লাল শাক, কচু শাক ও পুঁই শাককেই । লাউ গাছের লাউ খেয়েই যেন বাঙালিরা তৃপ্ত। কিন্তু লাউ শাকও যে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা রাখে সে কথাই আজ আপনাদের জানাবো।
প্যারালাইসিস, মস্তিষ্ক বিকৃতি ও মৃত শিশুর জন্ম লাভঃ-
লাউ শাক ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ গর্ভস্থ শিশুর স্পাইনাল কর্ড এবং মস্তিষ্কের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। ফলিক এসিডের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর স্পাইনাল কর্ডের বৃদ্ধি ব্যহত হয়; যার ফলে প্যারালাইসিস, মস্তিষ্ক বিকৃতি অথবা মৃত শিশু জন্মাতে পারে।
স্কার্ভি, মাড়ির রোগ এবং সাধারন ঠান্ডাঃ-
লাউ শাক উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ। ভিটামিন-সি ঠান্ডা এবং যে কোন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কোষ্ঠ কাঠিন্য ও পাইলসঃ-
লাউ শাকে যথেষ্ট পরিমাণে আঁশ থাকে। লাউ শাক এর আঁশ মল ত্যাগের সমস্যা দূর করে এবং পাইলস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ছানি, রেটিনাইটিস ও ঝাপসা দৃষ্টিঃ-
লাউ শাকের বেটা-ক্যারোটিন, লুটেইন এবং জিয়েজ্যান্থিন-এ পরিপূর্ণ। বেটা-ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং লুটেইন ও জিয়েজ্যান্থিন চোখের রোগ প্রতিরোধ করে, যেমনঃ রাতকানা।
অস্টিওপোরেসিসঃ-
উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকায় লাউ শাক অস্টিওপোরেসিস এবং অন্যান্য ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত রোগের ঝুঁকি কমায়।
হৃদ স্পন্দন নিয়ন্ত্রন, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকঃ-
লাউ শাক পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। পটাসিয়াম কোষের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শরীরে তরলের সাম্যাবস্থা বজায় রাখে এবং হৃদ স্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
আর্থ্রাইটিস ও অস্টিওপোরেসিসঃ-
লাউ শাকে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় যা হাড় শক্ত ও মজবুত করে।
এনিমিয়া ও বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনঃ-
আয়রন সমৃদ্ধ লাউ শাক রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ এবং লোহিত রক্ত কনিকার সংখ্যা বাড়িয়ে রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
স্থুলতাঃ-
এই শাকে ক্যালরি কম থাকে এবং এরা কোলেস্টেরল ও ফ্যাট মুক্ত। তাই ওজন কমানোর জন্য লাউ শাক খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে।