পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস হলো রমজান। আত্ম শুদ্ধির পাশাপাশি এ মাসে হতে পারে শরীর শুদ্ধিও। এজন্য খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। এবার গরমের সময়ে রমজান মাস শুরু হয়েছে, সেই সাথে প্রায় ১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। তাই অবশ্যই রমজানের খাবার চার্ট তৈরি করতে কিছু বিশেষ দিক খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে ইফতারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন, ফলে খুব তাড়াতাড়ি মুটিয়ে যান। সংযমের মাস হলেও দেখা যায় অনেকেই এই মাসে বেশ কয়েক কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলছেন। ইফতারে ভাজা-পোড়া খাওয়াটা হয়েই যায়। তাই খেতে হবে অবশ্যই রয়ে সয়ে যেন ওজন না বাড়ে। বরং আমরা চাইলে সহজেই রমজানে কিছুটা ওজন কমিয়ে আনতে পারি। প্রয়োজন কেবল সঠিক ডায়েট প্ল্যান। প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য উপাদান মিলিয়ে তৈরি করতে হবে এই ডায়েট প্ল্যান।
সেহরি যেমন হতে পারে-
সেহরিতে অতিরিক্ত তেল, লবন ও মশলাদার খাবার পরিহার করা উচিত। এগুলো দেহে পানি স্বল্পতা প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দেয়। খাওয়া যেতে পারে ফল, দুধ বা টক দই, সবজি সিদ্ধ, সবজি সালাদ, অল্প ভাত অথবা পাতলা রুটি, ১-২ পিস মাছ অথবা মুরগির মাংস অথবা ১ টি ডিম এবং ডাল। আর পানি খেয়ে নেবেন প্রয়োজনমত।
ইফতারের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে –
– প্রথমে লেবুর অথবা ডাবের পানি দিয়ে ইফতার শুরু করবেন। আর্টিফিশিয়াল রঙ যুক্ত পানীয়, সফট ড্রিঙ্ক একদমই পরিহার করবেন।
– খেজুর (১-২ টি) এবং অন্যান্য ফল কলা, আম, শসা, গাজর, আপেল ইত্যাদি খেতে পারেন। অথবা সব ফল দিয়ে আর টক দই দিয়ে একটি সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরে প্রচুর শক্তি পাবেন এবং ভিটামিন ও মিনারেলস এর ঘাটতি দূর হবে।
– এরপর আধা ঘন্টা বিরতি দিনদিন, একবারে সব খাবার খাবেন না। মাগরিবের নামাযের পর খেতে পারেন অল্প মুড়ি, ২টা পিয়াজু, ১টা বেগুনি বা অন্য কোনো খাবার। আর সাথে একটু ছোলা খেয়ে নিবেন প্রচুর সালাদ সহকারে।
– খাওয়ার পর সাথে সাথে পানি খাবেন না। অন্তত ২০ মিনিট পর পানি পান করুন। ভাজা পোড়া কিছু খেতে না চাইলে খেতে পারেন চিঁড়া ও দই, সাথে দিতে পারেন ফল। খেতে পারেন কাবাব ও নান রুটি, কিংবা অল্প কোনো চাল জাতিয় খাবার সাথে প্রচুর সালাদ দিয়ে।
রাতের খাবারের সম্ভাব্য ধরন হতে পারে –
ভাত বেশি না খেয়ে সবজি বেশি করে খান। রুটি খেলে আরও ভালো। আর সাথে থাকতে পারে ১ পিস মাছ অথবা মুরগির মাংস অথবা ১ টি ডিম । রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু গরম দুধ, লাচ্ছি, অথবা একটু পনির খেতে পারেন।
আরো কিছু টিপস-
১)ইফতার এবং সেহরি র মাঝখানে কম পক্ষে ৩ থেকে ৫ লিটার পানি খাবেন। এখন গরমকাল । তাই ঘামের কারনে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। ডাবের পানি খেতে পারেন। প্রতিদিনের ইফতারে মৌসুমি ফল রাখার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত চিনি যুক্ত শরবত পরিহার করা উচিত ।
২) এমন দিনে দই খুব উপকারী এবং প্রচুর শক্তি দেয়। তাই ইফতারে ভাজা খাবারের বদলে দই-চিঁড়া, লাচ্ছি রাখতে পারেন।
৩) ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার চা-কফি, কোমল পানীয় ইত্যাদি যথা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন।
৪) খাবারে অতিরিক্ত মসলা পরিহার করুন।
৫) প্রতিদিন খাবারের মেনুতে রঙ্গিন শব্জি ও ফল রাখবেন। যেমনঃ কুমড়া, গাজর, পাকা পেঁপে, কামরাঙ্গা,মালটা, আপেল, কমলা লেবু ইত্যাদি।
৬) অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীর থেকে ঘামের সাথে প্রচুর পটাশিয়ামও বের হয়ে যায়। তাই খাবারের তালিকায় ডাল, মাছ, মাংস অবশ্যই রাখবেন।
*****আমাদের লেখাগুলো ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না*****